
গত রাতে ইতালিয়ান সিরি আ এর ম্যাচে ব্রেসিয়াকে ৬-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আতালান্তা। এই আতালান্তার বিপক্ষেই চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে পিএসজি
কিছুদিন আগেই হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের ড্র। নিশ্চিত হয়ে গেছে কে কার
বিপক্ষে লড়বেন। করোনাভাইরাসের কারণে লিগ স্থগিত হওয়ার আগেই কোয়ার্টার
ফাইনালে উঠে যাওয়া পিএসজি ও আতালান্তা একে অপরের বিপক্ষে লড়বে, সেটিও জানা
হয়ে গিয়েছিল তখনই।
কাগজে-কলমে মহাপরাক্রমশালী পিএসজির সামনে অখ্যাত
আতালান্তার পাত্তাই পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু ফুটবল খেলার সৌন্দর্য তো
এখানেই! কাগজ-কলমের ম্যাড়মেড়ে হিসাব এখানে চলে না। আর চলে না দেখেই বলতে
হচ্ছে—চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে পিএসজিকে বেশ ভালোই যন্ত্রণা
দেবে আতালান্তা।
কথাটা আরও বেশি কল্কে পাচ্ছে গত রাতের পর থেকে।
ইতালিয়ান সিরি আ তে ব্রেসিয়ার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল আতালান্তা। ম্যাচে পেপ
গার্দিওলা-আন্দ্রেয়া পিরলো-রবার্তো ব্যাজিওদের সাবেক ক্লাবকে ৬-২ গোলে
উড়িয়ে দিয়ে পিএসজিকে হুঙ্কার দিয়ে রেখেছে আতালান্তা। হ্যাটট্রিক করেন
চেলসির সাবেক মিডফিল্ডার মারিও পাসালিচ। একটি করে গোল করেন কলম্বিয়ার
স্ট্রাইকার দুভান জাপাতা, ইউক্রেনের মিডফিল্ডার রুসলান মালিনভস্কি ও ডাচ
মিডফিল্ডার মার্তেন ডে রুন।
ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রেসিয়াকে চেপে
ধরে আতালান্তা। দুই মিনিট যেতে না যেতেই মালিনভস্কির সহায়তায় নিজের প্রথম
গোল করেন পাসালিচ। ছয় মিনিট পরে ব্রেসিয়ার স্ট্রাইকার আর্নেস্তো তোরেগ্রোসা
সেই গোল শোধ করে দেন। গোল খেয়ে যেন গোল করার ক্ষুধা আরও জেগে ওঠে 'লা
দেয়া' দের। ২৫ মিনিটে জার্মান লেফট উইংব্যাক রবিন গোসেনসের সহায়তায় গোল পান
ডে রুন। তার ঠিক তিন মিনিট পরেই দৃশ্যপটে আবারও মালিনভস্কির আগমন, তবে
এবার গোল সহায়তাকারী হিসেবে নয়, গোলদাতার ভূমিকায়। গোলে সহায়তা করেন
বেলজিয়ান উইংব্যাক টিমোথি কাস্তানিয়ে। দুই মিনিট পরেই আবারও গোসেনস করান,
এবার স্ট্রাইকার জাপাতাকে দিয়ে। প্রথমার্ধ শেষ হয় ৪-১ স্কোরলাইনে।
দ্বিতীয়ার্ধে
যেন নতুন করে জেগে ওঠেন পাসালিচ। মালিনভস্কির সহায়তায় নিজের দ্বিতীয় ও
দলের পঞ্চম গোল করেন ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার। ৫৮ মিনিটের মধ্যেই হ্যাটট্রিক
পূর্ণ করে ফেলেন তিনি। ম্যাচের একদম শেষদিকে এসে দলের তারকা মিডফিল্ডার
সান্দ্রো তোনালির কাছ থেকে বল নিয়ে সান্ত্বনাসূচক গোল করেন ব্রেসিয়ার
উইঙ্গার নিকোলাস স্পালেক।
শুধু এই ম্যাচ বলেই নয়, গোটা মৌসুমেই
আতালান্তা আছে দুর্দান্ত ফর্মে। গত ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাসের ঘাম
ছুটিয়ে দিয়েছিল তাঁরা, ড্র করেছিল ২-২ গোলে। সব মিলিয়ে লিগের ৩৩ ম্যাচে এই
নিয়ে ৯৩ গোল হয়ে গেল দলটার। প্রতি ম্যাচে প্রায় তিনটি করে গোল! এর মধ্যে আট
ম্যাচেই অন্তত চারটি করে গোল করেছে দলটা। শেষ ১৫ ম্যাচে একটিও হার নেইনি,
১৯ গোল খাওয়ার পাশাপাশি করেছে ৫১ গোল। একশ গোলের মাইলফলক স্পর্ষ করতে এখনও
পাঁচটা ম্যাচ পাচ্ছেন জাপাতা-গোমেজরা। আর সে মাইলফলক স্পর্শ করা হলে ১৯৫১
সালের পর প্রথম ইতালিয়ান দল হিসেবে এই কীর্তি গড়বে আতালান্তা।
নেইমারদের বোধহয় আড়মোড়া ভেঙ্গে জেগে ওঠার সময় হলো।
0 Comments: